প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ও আমিরুল ইসলাম ( বর্ধমান ) :
নির্মম ভাবে পিটিয়ে তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে খুনের অভিযোগ ওঠলো বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে । মারধোরে গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো এক তৃণমূল নেতা। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে থানার নিগনে । মৃত তৃণমূলের বুথ সভাপতির নাম সঞ্জিত ঘোষ (৩৯)। নিগন গ্রামেই তার বাড়ি । চিকিৎসাধীন গুরুতর জখম তৃণমূল নেতার নাম ইব্রাহিম খান । এই ঘটনার জেরে মঙ্গলকোটে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিগন এলাকার নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী । মঙ্গলকোটের নিগন অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি
ধ্রুব ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন , প্রজাতন্ত্র দিবসে তাঁরা দলের নিগন অঞ্চলের কর্মীরা নিগনের পার্টি অফিসে একটি আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন । আলোচনা শেষে দুপুরে সবাই যে যার বাড়ির দিকে রওনা হন । সঞ্জিত ঘোষ যখন নিগন গ্রামে বাড়ির কাছাকাছি পৌছান তখন ৭-৮ জন বিজেপি কর্মী তার পথ আটকায় । লাঠি ও রড দিয়ে বিজেপি কর্মীরা তাকে নির্মম ভাবে পেটায় । মাথা সহ শরীরের বিভিণ্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত লাগায় সঞ্জিত জ্ঞান হারিয়ে রক্তাত অবস্থার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । তার পরেও বিজেপি কর্মীরা তাকে মারধোর করে । এর কিছুক্ষণ পরেই মঙ্গলকোটের তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের
সভাপতি ইব্রাহিম খান একই পথ ধরে নিগন সংলগ্ন গোবরধনপুর গ্রামে নিজের বাড়ি যাচ্ছিলেন । সঞ্জিত কে মারধোর করে জখম করা হয়েছে দেখে ইব্রাহিম খান প্রতিবাদ শুরু করে দেন । তখন তাকেও ওই বিজেপি কর্মীরা বেপরোয়া মারধোর করে জখম করে । ধ্রুব বাবু বলেন ,এই ঘটনার খবর পেয়ে দলের অন্য সকল কর্মীরা মিলে ঘটনাস্থলে পৌছো জখম দু’ জনকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান । শারীরিক অবস্থা সংকটজনক থাকায় সঞ্জিতকে স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমানে । সেখানেই এদিন রাতে সঞ্জিত ঘোষ মারা যান । ইব্রাহিম খান কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন । এই ঘটনা বিষয়ে মঙ্গলকোট বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বশেন , “সোমবার বিজেপির সৌমিত্র খাঁ মঙ্গলকোটে সভা করে । সেই সভায় সৌমিত্র খাঁ উত্তেজনা মূলক কথা বলে । এরপরেই বিজেপি কর্মীর বিধানসভা ভোটের আগে মঙ্গলকোট অশান্ত করা পরিকল্পনা করে ।সেই অনুযায়ী বিজেপি কর্মীরা এদিন তৃণমূল কর্মী সঞ্জিত ঘোষকে পিটিয়ে মেরেছে । অনুব্রত অন্ডল এদিন হুঁশিয়ারি দেন , বিজেপি যদি ভেবে থাকে খুন জখম করে তৃণমূল রুখবে, তাহলে বজেপি মুর্খের সর্গে বাস করছে । প্রয়োজনে পাল্টা মার শুরু হবে । “
যদিও কাটোয়া নিবাসী জেলা বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ দাবি করেছে সঞ্জিত ঘোষ একজন সমাজবিরোধী , দুস্কৃতি । নিগন এলাকার মানুষজনের উপরে ওই ব্যক্তি অত্যাচার চালাতো । সঞ্জিত ঘোষের মৃত্যুর কারণ তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব । উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ঘটনার সঙ্গে বিজেপির নাম জড়ানো হচ্ছে ।