তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে : চরমে উত্তেজনা

26th January 2021 10:51 pm বর্ধমান
তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে : চরমে উত্তেজনা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ও আমিরুল ইসলাম ( বর্ধমান ) :

নির্মম ভাবে পিটিয়ে তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে খুনের অভিযোগ ওঠলো বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে । মারধোরে গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন  আরো এক তৃণমূল নেতা। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে থানার নিগনে । মৃত তৃণমূলের বুথ সভাপতির নাম সঞ্জিত ঘোষ (৩৯)। নিগন গ্রামেই তার বাড়ি । চিকিৎসাধীন গুরুতর জখম তৃণমূল নেতার নাম ইব্রাহিম খান । এই ঘটনার জেরে  মঙ্গলকোটে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিগন এলাকার নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী । মঙ্গলকোটের নিগন অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি 
ধ্রুব ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন , প্রজাতন্ত্র দিবসে তাঁরা দলের নিগন অঞ্চলের কর্মীরা নিগনের পার্টি অফিসে একটি আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন । আলোচনা শেষে দুপুরে সবাই যে যার বাড়ির দিকে রওনা হন । সঞ্জিত ঘোষ যখন নিগন গ্রামে বাড়ির কাছাকাছি পৌছান তখন ৭-৮  জন বিজেপি কর্মী তার পথ আটকায় । লাঠি ও রড দিয়ে বিজেপি কর্মীরা তাকে নির্মম ভাবে পেটায় । মাথা সহ শরীরের বিভিণ্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত লাগায় সঞ্জিত জ্ঞান হারিয়ে রক্তাত অবস্থার  মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । তার পরেও বিজেপি  কর্মীরা তাকে মারধোর করে । এর কিছুক্ষণ পরেই মঙ্গলকোটের তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের 
সভাপতি ইব্রাহিম খান একই পথ ধরে নিগন সংলগ্ন গোবরধনপুর গ্রামে নিজের বাড়ি যাচ্ছিলেন । সঞ্জিত কে মারধোর করে জখম করা হয়েছে দেখে ইব্রাহিম খান প্রতিবাদ শুরু করে দেন । তখন তাকেও ওই বিজেপি কর্মীরা বেপরোয়া মারধোর করে জখম করে । ধ্রুব বাবু বলেন ,এই ঘটনার খবর পেয়ে দলের অন্য সকল কর্মীরা মিলে ঘটনাস্থলে পৌছো জখম দু’ জনকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান । শারীরিক অবস্থা সংকটজনক থাকায় সঞ্জিতকে  স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমানে । সেখানেই এদিন রাতে সঞ্জিত ঘোষ মারা যান । ইব্রাহিম খান কাটোয়া  মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন ।  এই ঘটনা বিষয়ে মঙ্গলকোট বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বশেন , “সোমবার বিজেপির সৌমিত্র খাঁ মঙ্গলকোটে সভা করে ।  সেই সভায় সৌমিত্র খাঁ উত্তেজনা মূলক কথা বলে । এরপরেই বিজেপি কর্মীর বিধানসভা ভোটের আগে মঙ্গলকোট অশান্ত করা পরিকল্পনা করে ।সেই  অনুযায়ী বিজেপি কর্মীরা এদিন তৃণমূল  কর্মী সঞ্জিত ঘোষকে পিটিয়ে মেরেছে । অনুব্রত অন্ডল এদিন হুঁশিয়ারি দেন , বিজেপি যদি ভেবে থাকে খুন জখম করে তৃণমূল রুখবে, তাহলে  বজেপি মুর্খের সর্গে বাস করছে । প্রয়োজনে পাল্টা মার শুরু হবে । “

   যদিও কাটোয়া নিবাসী জেলা বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ দাবি করেছে সঞ্জিত ঘোষ একজন সমাজবিরোধী , দুস্কৃতি । নিগন এলাকার মানুষজনের উপরে ওই ব্যক্তি অত্যাচার চালাতো । সঞ্জিত ঘোষের মৃত্যুর কারণ তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব । উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ঘটনার সঙ্গে বিজেপির নাম জড়ানো হচ্ছে । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।